বিগ ব্যাং ও সূর্যের সৃষ্টি

বিগ ব্যাং ও সূর্যের সৃষ্টি

বিগ ব্যাং হচ্ছে মহা বিস্ফোরণ। এটি মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে এ পর্যন্ত চলে আসা ধারণাগুলোর সর্বশেষ। তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং তাঁর A Brief History of Time বইটিতে বিগ ব্যাং ও মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ বুঝানোর জন্য গাণিতিক সূত্র (E =MC2) ব্যবহার করেছিলেন। ১৫ বিলিয়ন বছর আগে এই মহাবিশ্ব একটি অসীম অথবা অতি ক্ষুদ্রাকার ভরসম্পন্ন একটি অতি উত্তপ্ত বিন্দুতে পুঞ্জীভূত ছিল যাকে বলা হয় সিঙ্গুলারিটি (Singularity)।  এরপর মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘটল এক মহা বিস্ফোরণ। এটাই বিগ ব্যাং।
তিন শ হাজার বছর পর মহাবিশ্বের তাপমাত্রা এমন একটি পর্যায়ে নেমে আসল যেটা পরমাণুর (Atom) গঠন তৈরি হতে লাগল। মহাবিশ্বের প্রথম পরমাণু ছিল হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম। হাইড্রোজেস্ত একটিমাত্র ইলেকট্রোন বিশিষ্ট। র্থাৎ এতে প্রোটন আছে একটি যাকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রনটি  ঘুর্ণায়মাণ।আর হিলিয়ামে আছে দুইটি ইলেকট্রোন যা অপর দুটি নিউট্রন ও দুটি প্রটোনকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।


এভাবে কেটে যায় আরও প্রায় এক মিলিয়ন বছর। তখনো এই নতুন মহাবিশ্ব কোনো গ্রহের জন্ম দেয়নি। তখন এটি উত্তপ্ত মেঘ ও ধুলিকণায় পূর্ণ ছিল। আর এতে ছিল ৯৮% হাইড্রোজেন ও ২% হিলিয়াম। এটাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় নেবুলা বলে।


১০ বিলিয়ন বছর অতিবাহিত হলো এভাবে। নেবুলার মধ্যে শুরু হলো একধরনের ফিউশন রিঅ্যাকশন। এতে ক্ষুদ্র পরমাণুগুলোর পরস্পর সংঘর্ষে বৃহদাকার পরমাণুতে পরিণত হয় এবংএর আকার ও আকৃতির পরিবর্তন ঘটে বৃত্তাকার চাকতির গঠন প্রাপ্ত হয়। এই চাকতির কেন্দ্রস্থলে সৃষ্টি হয় এক অতি বৃহৎ আকৃতির গোলাকার বল যা ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত হতে থাকে। এটিই আমাদের সূর্য।